Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

নিরাপদ ও রপ্তানিযোগ্য ফুল ও সবজি উৎপাদনে করণীয়

মোঃ জিয়াউল হক
বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত কৃষিনির্ভর। অর্থনৈতিক খাত হিসেবে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে জিডিপিতে স্থির মূল্যে কৃষি খাতের অবদান শতকরা ১৪.২৩ ভাগ তন্মধ্যে কেবল শস্য ও শাকসবজি উপখাতের অবদান শতকরা ৭.৫১ ভাগ। দেশের মোট শ্রমশক্তির শতকরা ৪০.৬২ ভাগ কৃষিতে নিয়োজিত (অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০১৮)।


মুক্তবাজার অর্থনীতির এ যুগে বিশ্বের সাথে তালমিলিয়ে উৎপাদন ক্ষমতা এবং উৎপাদন প্রযুক্তির সাথে সাথে বিপণন কৌশলের উন্নয়ন অনস্বীকার্য। তাই যে কোন ফসল উৎপাদনে উত্তম কৃষি চর্চা  অনুসরণ করতে হবে। পাশাপাশি নিরাপদভাবে উত্তোলন, প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং সংরক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিদ্যমান বাজার ব্যবস্থায় কৃষক ও ভোক্তা পর্যায়ে দামের ব্যবধান ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাজার সংযোগ  সুবিধা সৃষ্টি এবং বাজার ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের মাধ্যমে কৃষকদের সরাসরি পাইকারি বাজারে প্রবেশাধিকার নিশ্চিতের পাশাপাশি কৃষকদের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করা জরুরি। সরকারি এবং বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বাজার ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন, পণ্যের গ্রেডিং, ওয়াশিং, প্যাকেজিং ও প্রক্রিয়াজাতকরণ ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করাও প্রয়োজন।


বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভিত্তিতে ফুল উৎপাদন শুরু হয় ১৯৮৩ সালে যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার পানিসরা গ্রামে। বর্তমানে বাংলাদেশের ২৪টি জেলার প্রায় ৫,৬৬৫ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হচ্ছে (ডিএই ২০১৭-১৮)। ফুল উৎপাদন ও বিপণনে প্রায় ১.৫০ লক্ষ মানুষ সরাসরি নিয়োজিত রয়েছে। ফুল শিল্পের সম্প্রসারণের ফলে ফুলের ব্যবহার কয়েক গুণ বেড়েছে।


বিশ্বে বর্তমানে ফুলের বাজারমূল্য প্রায় ৪০-৫০ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু বৈশ্বিক বাণিজ্যে এ খাতে দেশের অবদান মাত্র শতকরা ৩.৫ ভাগ। আশা করা যায় আগামীতে বৈশ্বিক ফুলের বাজারমূল্য দাঁড়াবে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশের পরিবেশ, জলবায়ু ও মাটি ফুল চাষের জন্য উপযোগী বিধায় এ খাতের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। দেশে প্রায় ১৩ জাতের ফুল উৎপাদিত হচ্ছে। তন্মধ্যে গোলাপ, রজনীগন্ধা, জারবেরা, গাঁদা, গøাডিওলাস, জিপসি, রডস্টিক, কেলেনডোলা ও চন্দ্রমল্লিকা বেশি উৎপাদিত হচ্ছে।


অপরদিকে দেশের মোট ফসলি জমির প্রায় ৫% অর্থাৎ আবাদযোগ্য জমির প্রায় ১০% সবজি উৎপাদনে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ অল্প পরিমাণ জমি থেকে ক্রমবর্ধিষ্ণু বিপুল জনগোষ্ঠীর সবজি চাহিদা মেটানো হচ্ছে। বিশ্বে সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর তথ্য অনুযায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রায় ১২.৫২ লক্ষ হেক্টর জমি থেকে ২৬৮.১৬ লক্ষ মেট্রিক টন সবজি উৎপাদিত হয়েছে। এ ছাড়াও ৭ লাখ ২৯ হাজার জমি হেক্টর থেকে ১২৩.৮৯ লক্ষ ফল উৎপাদিত হয়েছে। যদিও সবজিভিত্তিক পুষ্টি গ্রহণের উপাত্ত ও পরিমাণে ভিন্নতা রয়েছে। যেমন: গড়ে দৈনিক পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির গ্রহণ করা প্রয়োজন ২০০-৩০০ গ্রাম। আর গ্রহণ করছে মাত্র ১০০-১৬৬ গ্রাম। সেক্ষেত্রে সবজির উৎপাদন বর্তমানের তুলনায় আরও দ্বিগুণের বেশি বাড়াতে হবে।


দেশে প্রায় ১০০টি জাতের সবজি উৎপাদন হচ্ছে। আমাদের দেশে প্রায় ১ কোটি ৬২ লক্ষ কৃষক পরিবার রয়েছে।  প্রায় প্রতিটি কৃষক পরিবার কম বেশি সবজি চাষ করছে। জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থা (ঋঅঙ) এর তথ্য মতে গত চল্লিশ বছরে বাংলাদেশে সবজি উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় পাঁচ গুণ। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের প্রায় ৫০টি দেশে বাংলাদেশের ৫০ জাতের সবজি রপ্তানি হচ্ছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য মতে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে  ৬৫০ কোটি ৪১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার সবজি রপ্তানি হয়েছে এবং রপ্তানির পরিমাণ প্রতি বছর বাড়ছে। দেশের রপ্তানিকৃত সবজির প্রায় ৬০% মধ্যপ্রাচ্যে এবং বাকি ৪০% ইউরোপসহ অন্যান্য দেশে যাচ্ছে।  বিদেশে বাংলাদেশের সবজির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কিন্তু উদ্যোক্তারা চাহিদার মাত্র ২-৫ শতাংশ রপ্তানি করতে পারছে।


বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার রপ্তানিযোগ্য ও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন এবং কার্যকর বাস্তবায়নে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছে।   নিরাপদ ও রপ্তানিযোগ্য ফুল ও সবজি উৎপাদনে করণীয়সমূহ
১. সারাদেশে ফুল ও সবজি উৎপাদনে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর কলাকৌশল বিষয়ে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা/উপসহকারী  কৃষি কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট কৃষককে জমি নির্বাচন, জমি তৈরি, ফসলের পরির্চযা, উত্তোলন ইত্যাদি বিষয়ে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে;
২. দেশীয় গবেষণাগার অথবা প্রয়োজনে আমদানি করে উন্নত জাতের বীজ ও চারা সরবরাহকরণ, বীজ ও চারা সংরক্ষণের নিমিত্ত প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ এবং তা কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে;
৩. পরিমিত মাত্রায় সার ও বালাইনাশক প্রয়োগে সচেতনতা  বৃদ্ধি করে নিরাপদ ও রপ্তানিযোগ্য ফুল ও সবজি উৎপাদন ও রপ্তানির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার প্রদান এবং ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে;
৪. ফুল ও সবজি উৎপাদনে সেচের পানি বিতরণ ও প্রয়োগ পদ্ধতি গুরুত্বপূর্ণ। অন্যান্য ফসলে যে পদ্ধতিতে সেচ প্রয়োগ করা হয় ফুল ও সবজিতে তা করা সম্ভব হয় না। ফুল ও সবজিতে ড্রিপ এবং স্প্রিংকলার সেচ পদ্ধতিই সঠিক সেচ প্রযুক্তি। স্প্রিংকলার ও ড্রিপ সেচ পদ্ধতিতে প্রতিটি গাছের গোড়ায় প্রয়োজনীয় ও পরিমিত সেচ প্রয়োগ করা যায়। ফলে পানির অপচয় হয় না। অপরদিকে, ড্রিপ ও স্প্রিংকলারের সাথে পরিমিত মাত্রায় সার মিশিয়ে ফার্টিগেশন করা যাবে। তাই নিরাপদ ফুল ও সবজি উৎপাদনে ড্রিপ ও স্প্রিংকলার সেচ পদ্ধতির কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে;
বিএডিসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান বর্তমান কৃষি সচিব জনাব মোঃ নাসিরুজ্জামান এর নির্দেশনায় “যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলায় ফুল ও সবজি উৎপাদন সম্প্রসারণে ড্রিপ ইরিগেশন” শীর্ষক কর্মসূচির মাধ্যমে নিরাপদ ও রপ্তানিযোগ্য ফুল ও সবজি উৎপাদনের কার্যক্রম ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। উক্ত কর্মসূচি গ্রহণ করার ফলে নিরাপদ ও রপ্তানিযোগ্য ফুল ও সবজি উৎপাদিত হচ্ছে এবং কৃষক তার সুফল পাচ্ছে।     
৫. নিরাপদ ফুল ও সবজি উৎপাদনে পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো অর্থাৎ পলি হাউজ নির্মাণ প্রয়োজন। উক্ত পলি হাউজে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, অতি বেগুনি রশ্মি, ক্ষতিকারক কীটপতঙ্গ হতে রক্ষা করে শীত গ্রীষ্মসহ সব মৌসুমে নিরাপদ ও রপ্তানিযোগ্য ফুল ও সবজি উৎপাদন করা সম্ভব। ফগার ইরিগেশনের মাধ্যমে আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করে গুণগতমান অক্ষুণœ রেখে ফলনও বৃদ্ধি করা যাবে। “পলিশেডে পানি সাশ্রয়ী সেচাবাদ, খাবার হবে পুষ্টিসম্মত ও নিরাপদ” এছাড়াও পলি হাউজে ভার্টিক্যাল হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে ভূমির উপর ৫ স্তরে ফুল ও সবজি উৎপাদন করা সম্ভব হবে;

৬. ফুল ও সবজি সংরক্ষণের পর রপ্তানির লক্ষ্যে প্রক্রিয়াজাতকরণ, প্যাকেজিং ও সাময়িক সংরক্ষণ করা হলে একদিকে অপচয় কমবে, অপরদিকে উৎপাদনকারীর ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করে সবার জন্য বছরব্যাপী পুষ্টি নিশ্চিত করা যাবে। ফলে ফুল ও সবজি সর্বোচ্চ বাজারমূল্য প্রাপ্তি ও রপ্তানি বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে এবং পোস্ট হারভেস্ট লস কমে যাবে। উক্ত কার্যক্রমের জন্য হারভেস্টিং ইয়ার্ড, গ্রেডিং, ওয়াশিং, এসেম্বল ও প্রসেসিং সেন্টার নির্মাণ করতে হবে;
৭. উৎপাদিত ফুল ও সবজি সংগ্রহের পর বিভিন্ন পর্যায়ে  ২৫-৪০% নষ্ট হয় এবং ভরা মৌসুমে ফুল ও সবজির দাম কমে যায়। ফলে কৃষক ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হয়। বিভিন্ন প্রকার শীতলীকরণ অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে সংগৃহীত ফুল ও সবজি রপ্তানির পূর্ব পর্যন্ত কৃষকের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি  নিশ্চিতকরণের জন্য স্বল্প মেয়াদে সংরক্ষণ এবং কুলিং পরিবহণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে;
৮. রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের শহরগুলোতে নিরাপদ ও রপ্তানিযোগ্য ফুল ও সবজি বিক্রয়ের জন্য সম্পূর্ণ আলাদা  কৃষক বাজার প্রতিষ্ঠা করতে হবে;
৯. নিরাপদ ও রপ্তানিযোগ্য ফুল ও সবজি চাষ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কৃষকদের সহজ শর্তে স্বল্পসুদে  কৃষি ঋণের ব্যবস্থা অথবা সরকারি পর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে   সহায়তা বৃদ্ধি করতে হবে;
১০. নিরাপদ ফুল ও সবজি উৎপাদনে এবং খাদ্য মানের উপযোগিতা, উপকারিতা, বিক্রয় বিষয়ে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াকে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা করতে হবে;
১১. কৃষিজাত দ্রব্যের স্বাস্থ্যসম্মত সংরক্ষণ ব্যবস্থা গ্রহণে হিমায়িতকরণের মাধ্যমে সংরক্ষণসহ বিভিন্ন পদ্ধতির সংরক্ষণ ব্যবস্থা করার ফলে সংরক্ষিত কৃষিজাত পণ্য এখন সারা বছরব্যাপী স্থানীয় বাজারে বিক্রয়সহ বিদেশে রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ সুযোগের ফলে শিল্প বিকাশের ক্ষেত্রে আগামী দশকটিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হবে এবং জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে শতকরা ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ অংশীদার হবে বলে আশা করা যায়। উল্লিখিত পরিমাণ প্রবৃদ্ধি ও অগ্রগতি অর্জনের জন্য সাধারণ শিল্প ও কৃষিভিত্তিক শিল্প বিকাশের সরকারি পরিকল্পনায় উল্লেখযোগ্য পলিসিগত পরিবর্তন এনে কৃষি শিল্প উদ্যোক্তা/রপ্তানিকরণ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে।য়

প্রধান প্রকৌশলী (ক্ষুদ্রসেচ), বিএডিসি, ঢাকা, মোবাইল : ০১৭১৮৭৮১৯৭৯, ই-মেইল: aeirigation 2bade@gmail.com

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon